নাগরিক ডেস্ক: মেডিকেলে ভর্তি হওয়া প্রবল প্রসববেদনায় ছটফটরত এক প্রসূতি মায়ের সন্তান জন্ম হলো লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে ভ্যানের উপর। সন্তান জন্মের সময় সহযোগিতা না করে উল্টো ক্লিনিকে নিয়ে সিজার করার জন্য চাপ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে নার্সদের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার ( ১২ মার্চ) রাত সাড়ে ১২টার দিকে ওই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনেই এ ঘটনাটি ঘটে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে দায়ী নার্সদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত বলে সচেতন মহলের দাবী।
জানা গেছে, উপজেলার পুর্ব বিছনদই এলাকার দিনমজুর রুহুল আমিনের গর্ভবতী মেয়ে মনিফা বেগমের (২২) বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে প্রসববেদননা শুরু হয়। পরে রাত ১০টার দিকে ভ্যানযোগে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে ভর্তি করান মনিফার ছোট ভাই রাকিব (১৫)। যার ভর্তি রেজি নং ৩৩৫৬/৫০ ও ওয়ার্ডে ভর্তি রেজি-১৪২৩। কিন্তু মেডিকেলে ভর্তির পর থেকে গর্ভবতী মনিফাকে কোন নার্স বা আয়া সহযোগীতা না করে উল্টো তাকে ক্লিনিকে গিয়ে সিজারের জন্য ডিউটিরত সিনিয়র স্টাফ নার্স তাহমিনা ও রঞ্জিলা বেগম চাপ দেয় দেয় বলে জানা যায়। সিজার করার সামর্থ না থাকায় মেডিকেলেই বাচ্চা প্রসবের চেষ্টা করার জন্য নার্সদের কাছে কান্নাকাটি করে অনেক অনুরোধ করলেও তাদের মন গলেনি। নিরুপায় হয়ে রাকিব তার বোনকে নিয়ে মেডিকেলের নিচে নেমে কারও সহযোগিতা পাবার আশায় এদিক ওদিক ছুটাছুটি করতে থাকেন। অনেক হয়রানি হবার পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সামনে এক মহিলার সহযোগিতায় ভ্যানের উপরেই মনিফার একটা ফুটফুটে ছেলে বাচ্চা হয়। বাচ্চাটি বর্তমানে সুস্থ আছে। সরকারি মেডিকেলের নার্স ও ডাক্তারের কার্যকলাপ নিয়ে এলাকাজুড়ে ইতিমতো সমালোচনার ঝড় উঠে। সরকারি মেডিকেলে ভর্তিরত প্রসববেদনায় কাতর একজন প্রসূতি মায়ের সন্তান কিভাবে মেডিকেলের সামনে ভ্যানের উপরে প্রসব হয় এ নিয়ে প্রশ্ন এখন লালমনিরহাট জেলার সবার মুখে।
এ বিষয়ে কথা হলে অপর সিনিয়র স্টাফ নার্স রঞ্জিলা বেগম জানান, আমি ঐ সময় অনডিউটে বাসায় ছিলাম। সিনিয়র নার্স তাহমিনা বেগমের ফোন পেয়ে মেডিকেলে এসে দেখি, প্রসূতি মনিফা বেগমের জরায়ুর মুখ খোলা ছিলো কিন্তু তার গর্ভে বাচ্চাটি উল্টো দিকে থাকায় তার একটি পা জরায়ুর বাহিরে বের হয়, ফলে আমরা তার বাচ্চাপ্রসবে ঝুকি নিতে চাইনি। তবে ঐ মহিলাকে ক্লিনিকে সিজার করার জন্য চাপ দেয়ার কথা অস্বীকার করেন তিনি।