নাগরিক প্রতিবেদক: বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের (আরইউজে) উদ্যোগে ‘বঙ্গবন্ধু মিডিয়া ক্রিকেট কার্নিভাল-২০২০’ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়েছে। রাসিক মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজশাহী জেলা মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে ক্রিকেট কার্নিভালের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব শাবান মাহমুদ। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাজী সাহেদ। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে টুর্নামেন্টের কমিটির আহ্বায়ক কবীর তুহিন, সদস্য তানজিমুল হকসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন আয়োজিত বঙ্গবন্ধু মিডিয়া ক্রিকেট কার্নিভাল আজকের খেলায় `দি ফাইটার' দলকে হারিয়ে
`ডায়নামিক কিংসের’ দল বিজয়ী হয়েছে। ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হয়েছেন ডায়নামিক কিংস এর খেলোয়াড় আজম খান।
নাগরিক সময় : সাকিব ইস্যুতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বর্তমান সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকে রীতিমতো ধুয়ে দিলেন বিসিবির সাবেক সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ কয়েকটি টুইটে তিনি পাপনের দিকে আঙুল তুলেছেন। সাকিবদের ধর্মঘটের পর গত ২২ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলনে ‘ম্যাচ ফিক্সিংয়ের খবর আসছে’ বলে যে উক্তি করেছিলেন পাপন, সেটির ভিডিও শেয়ার করে সাবের হোসেন চৌধুরী ‘মিথ্যাবাদী’ অ্যাখ্যা দিয়েছেন বিসিবির বর্তমান সভাপতিকে। তথ্য ও ছবি: জাগো নিউজ।
আরেক টুইটে বিসিবির সাবেক সভাপতি লিখেছেন, ‘ভণ্ডামি, সর্বোৎকৃষ্ট/নিকৃষ্টের দ্বৈত চরিত্র। বিসিবি আইসিসির সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়েছে। ক্রিকেট দুর্নীতির বিরুদ্ধে সমান আবেগই দেখিয়েছে। কিন্তু সংস্থাগত ম্যাচফিক্সিং দুর্নীতির মূলোৎপাটন না করে, ঘরোয়া ক্রিকেটে সেটাকে আরও উৎসাহিত করছে বিসিবি। লজ্জাজনক।’
সাকিবের পাশে দাঁড়াবে বিসিবি, এমন আশ্বাসকেও বিশ্বাস করার মতো নয় মনে করছেন সাবের হোসেন চৌধুরী। অপর টুইটে সাবের হোসেন লিখেন, ‘কেউ যখন অপরাধ করে, সুবিচার প্রাপ্য। বিসিবি কমপক্ষে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ কমানোর চেষ্টা করতে পারতো। দুঃখ লাগছে যে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এই জায়গায় সাকিবের পাশে দাঁড়ায়নি। এখন অযথা মায়াকান্না দেখাচ্ছে।’
নাগরিক সময় : বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণায় বুধবার সকাল ১০ টায় রাবির মেইন গেট এলাকায় রাজশাহী-নাটোর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন রাবি শিক্ষার্থীরা।
এসময় শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, সাকিবকে ষঢ়যন্ত্রমুলকভাবে আইসিসি কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এক শ্রেণির মানুষের স্বার্থে হাসিলের জন্য। এছাড়া সাকিবকে দলে ফিরিয়ে আনতে হবে। কারো স্বার্থ হাসিলের জন্য এমন খেলোয়ারকে মাঠের বাইরে দেখতে চাই না দেশবাসী। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান পাপনকে বোর্ড থেকে অপসারণ করতে হবে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের ক্রিকেট ধ্বংসের দেশি-বিদেশী চক্রান্তের প্রতিবাদ জানানো হয়।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের টি-টুয়েন্টি ও টেস্ট অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে ম্যাচ পাতানোর প্রস্তাব গোপন করার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে আইসিসির তদন্তের ঘটনায় তোলপাড় চারদিক। এমন অবস্থায় খবর প্রকাশ হয়েছে এই অলরাউন্ডার নিষিদ্ধ হতে পারেন।এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জানান, সাকিবকে নিয়ে আইসিসির সিদ্ধান্তের বিষয়ে বিসিবির বেশি কিছু করার নেই।
মঙ্গলবার দুপুরে গণভবনে সংবাদ সম্মেলন এ কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে সদ্য সমাপ্ত ১৮তম জোট নিরপেক্ষ সম্মেলন (ন্যাম) নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিসিবি সব সময় সাকিবের সঙ্গে আছে। সব ধরনের সহযোগিতা তাকে দেওয়া হবে। তবে ওর উচিত ছিল ফিক্সিংয়ের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা। কিন্তু সে তা করেনি। গোপন না করে সেটা আইসিসিকে তার জানানো উচিৎ ছিল। সে এটা ভুল করেছে। আইসিসি যদি অবস্থান নেয়, সে ক্ষেত্রে আমাদের তো খুব বেশি কিছু করার থাকে না। তারপরেও আমাদের যা করার সেটা করা হবে।’
ক্রিকেট খেলোয়াড়দের ধর্মঘটের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্লেয়াররা হঠাৎ ধর্মঘট ডাকলো। তারা তাদের দাবি বিসিবিকে জানাতে পারতো। সেটা তারা করেনি। যাই হোক, পরবর্তীতে বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সেটা এখন মিটমাট হয়ে গেছে। আমরা যেভাবে খেলোয়াড়দের সাপোর্ট দেই। এটা হয়তো অন্য কোনো দেশ করে না।’
উল্লেখ্য, দুই বছর আগে জুয়াড়িদের কাছে থেকে প্রস্তাব পেয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেন সাকিব। কিন্তু বিষয়টি তিনি গোপন করেন। আইসিসি বা বিসিবিকে জানাননি। খবর: ইত্তেফাক।
নাগরিক ডেস্ক: বাংলাদেশ-ভারত প্রথম টি-২০ ম্যাচে জঙ্গি হামলা হতে পারে! এমনই এক হুমকিমূলক চিঠি পেয়েছে ভারতের সন্ত্রাস-তদন্ত সংস্থা, ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। এরপরই দিল্লি পুলিশকে বাংলাদেশ-ভারত সিরিজে বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করতে বলা হয়েছে। দিল্লি পুলিশের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ-ভারত সিরিজের আগেও হামলার শিকার হতে পারে ভারতীয় ক্রিকেট দল। সন্ত্রাসীগোষ্ঠী অল ইন্ডিয়া লস্কর-ই-তৈয়বার পাঠানো একটি চিঠিতে এমন হুমকি দেওয়া হয়েছে।
হুমকির বিষয়ে ইতিমধ্যে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে সতর্ক করেছে এনআইএ। সেইসঙ্গে ভারতীয় ক্রিকেট দলের সদস্যদের নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হয়েছে।
আগামী ৩ নভেম্বর বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচটি ভারত খেলবে নয়াদিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে। ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, সেখানেই ভারতীয় ক্রিকেট দলের ওপর হামলা হতে পারে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে।
দিল্লি পুলিশের সূত্র জানায়, চিঠিতে হামলার নিশানায় রয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক বিরাট কোহলি। তবে তিনি টি ২০ সিরিজে দলে নেই। এছাড়াও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ওপরেও হামলা হতে পারে বলে চিঠিতে হুমকি দেয়া হয়েছে। দিল্লি পুলিশের সূত্র এই চিঠি ভুয়া হতে পারে বলে মনে করলেও কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিচ্ছে। তথ্যসূত্র: আউটলুক ইন্ডিয়া, টাইমস নাউ নিউজ, এইসময়।
নাগরিক ডেস্ক: জাতীয় ক্রিকেট লিগের খেলোয়াড়দের ম্যাচ ফি বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সোমবার জাতীয় লিগের ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি বাড়ানো হয়। এই বর্ধিত ম্যাচ ফি অনুযায়ী, প্রথম স্তরে খেলা ক্রিকেটাররা পূর্ব নির্ধারিত ৩৫ হাজার টাকার পরিবর্তে পাবেন ৬০ হাজার টাকা এবং দ্বিতীয় স্তরে খেলা ক্রিকেটাররা ২৫ হাজারের পরিবর্তে পাবেন ৫০ হাজার টাকা।
এর আগে, ২১ অক্টোবর বেতন বাড়ানোসহ প্রথমে ১১ দফা দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দেন ক্রিকেটাররা। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের ক্রিকেটীয় কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবেন বলে বোর্ডকে জানান তারা। এর পরদিন বিসিবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। বলেন, ক্রিকেটারদের জন্য বিসিবির দরজা সবসময় খোলা।
পরদিন ২৩ অক্টোবর রাজধানীর একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ক্রিকেটাররা আরও দুই দফা দাবি যোগ করে মোট ১৩ দফা দাবি উত্থাপন করেন। একইদিন রাতে বিসিবির সঙ্গেও আলোচনায় বসেন ক্রিকেটাররা। আলোচনার পর ধর্মঘট প্রত্যাহার করেন তারা।
খেলার মাঠ: বাংলাদেশের ক্রিকেটে যেন শনির দশা লেগেছে। একের পর এক দুর্ঘটনা যেন তাড়া করে বেড়াচ্ছে। ক্রিকেটারদের আন্দোলন, বোর্ডের কঠোর অবস্থান, নিয়ম না মেনে সাকিবের গ্রামীণফোনের সঙ্গে চুক্তিতে যাওয়া- এর সঙ্গে যোগ হলো রোববার প্রস্তুতি ম্যাচ চলাকালীন মুশফিকুর রহীমের অস্বাভাবিক আচরণ।
এমনিতে বিনয়ী, নম্র ও স্বল্পভাষী মুশফিক বেশিরভাগ সময় হাঁটেন মাথা নিচু করেই। আজও প্রস্তুতি ম্যাচে সবুজ দলের বিপক্ষে ৩ বলে ৪ রান করে আউট হয়ে ওভাবেই ফিরছিলেন ড্রেসিংরুমের উদ্দেশ্যে। প্যাভিলিয়নের কাছাকাছি আসতেই এক সমর্থক উড়ো মন্তব্য করে বসেন মুশফিকের উদ্দেশ্যে।
সেই দর্শকের দাবি, আমি বলেছিলাম মাথা নিচু করে সাজঘরে ফিরছেন কেন? মাথা উঁচু করে যান। এটাই কটূক্তি ধরে মুশফিক ভাই আমাকে শাসিয়েছেন। আমি তাকে কোনো কটূক্তি করিনি।
অপ্রীতিকর এই ঘটনার জন্ম দেয়া ইমরানকে অবশ্য মুশফিক নিজেই বাঁচিয়েছেন। প্রথমে মেজাজ হারালেও ইমরানকে ছেড়ে দিতে বলেন অভিজ্ঞ এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানই। এর খানেক পর ছেড়ে দেয়া হয় তাকে। তবে তাকে আর মাঠে বসে খেলা দেখতে দেয়া হয়নি। তাকে মাঠ থেকে বের করে দেয়া হয়।
নাগরিক ডেস্ক: ধর্মঘটের মাঝে ঘটা করে টেলিকম কোম্পানি গ্রামীণফোনের সঙ্গে চুক্তি করেন সাকিব আল হাসান। দেশের শীর্ষস্থানীয় টেলিকম কোম্পানির সঙ্গে এই চুক্তি বিসিবির নিয়মবহির্ভূত বলে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড(বিসিবি)।
ক্রিকেটারদের সঙ্গে বিসিবি’র চুক্তি অনুসারে, একজন জাতীয় দলের খেলোয়াড় কোনো টেলিকম কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করতে পারবেন না। আজ দেশের এক দৈনিকে বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘ সে(সাকিব) কোনো টেলিকম কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করতে পারেনা। এবং কেন পারেনা তা আমাদের চুক্তিপত্রে লেখা আছে।’ মূলত এর আগে এমন চুক্তির ফলে বোর্ড আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন। বিসিবি প্রধান সেই প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘রবি(টেলিকম কোম্পানি) আমাদের টাইটেল স্পন্সর ছিল। এর মাঝে গ্রামীণফোন বিড না করে কয়েকজন খেলোয়াড়কে বাগিয়ে নেয় তাও মাত্র এক বা দুই কোটি টাকার বিনিময়ে। এতে কি হলো? তিন বছরে বোর্ড ৯০ কোটি টাকা হারালো। কয়েকজন খেলোয়াড়ের লাভের জন্য বোর্ড ভুগবে তা হতে পারেনা।
আতিকুর রহমান নগরী
প্রাবন্ধিক, কলামিস্ট
দৈনিক ইনকিলাব
আজকের এই পৃথিবীতে মুসলিম জনসংখ্যা প্রায় দেড়শ’ কোটির মতো। আজ পৃথিবীর অন্যান্য জাতিবর্গ সভ্যতার পোশাকধারী, আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান যাদের হাতে লালিত পালিত হচ্ছে। তারাই এসবের দাবিদার। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আজ একথা কেউ আর ভাবে না যে, এ সভ্যতা কোথা থেকে এলো? জ্ঞান-বিজ্ঞানের অন্বেষণ ও এর অনুসরণ-অনুকরণ, অনুধাবন মুসলমানদের ঈমানেরই অঙ্গ ও অংশবিশেষ। মহাগ্রন্থ আল-কোরআনে শিক্ষা-দীক্ষার জন্য নানারূপ উপদেশ বাণী রয়েছে। তদ্রুপ হাদীস শরীফেও বিভিন্ন উৎসাহ বাণী আছে। জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখা-প্রশাখা অনুসন্ধান করলে দেখা যাবে যে, মুসলমানদের ধর্মীয় প্রেরণা ও প্রয়োজন তাদেরকে জ্ঞানার্জনে বাধ্য করেছে। অবশ্য, অজানাকে জানা, অচেনাকে চেনার দুর্নিবার আগ্রহ এর মূলে রয়েছে। মধ্য যুগে তারাই বিশ্ববাসীকে বিজ্ঞান শিক্ষা দিতেন। আধুনিক বৈজ্ঞানিক যুগের সূত্রপাত তারাই করেছেন। পিকে. হিট্টির ভাষায় বলতে হয়, ‘অষ্টম শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় থেকে ত্রয়োদশ শতাব্দীর প্রারম্ভ পর্যন্ত কোরআন ও হাদীসধারীগণ সমগ্র বিশ্বে সভ্যতা সংস্কৃতিকে আলাদা করেছেন।’
ইতিহাস হচ্ছে একটি জাতির দর্পণ। তারই মধ্যে পূর্বের আলোকে, বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে ভবিষ্যৎ চিত্র সুন্দরভাবে প্রতিফলিত হয়। হিজরী দ্বিতীয় সনে ধারাবাহিকভাবে ইতিহাস রচনার প্রকৃত ভিত্তি গড়ে উঠে। আলী বিন মোহাম্মদ বিন আব্দুল্লাহ মাদায়েনী ছিলেন ইসলামের প্রথম ইতিহাস লেখক। সমগ্র বিশ্বের সর্বশেষ ঐতিহাসিক হচ্ছেন পারস্যের তাবারী স্থানের অধিকারী আবু জাফর মোহাম্মদ ইবনে জারীর আত্-তারাবী। যিনি দৈনিক ৪০ পৃষ্ঠা করে সুদীর্ঘ ৪০ বছর পর্যন্ত ইতিহাস লিখার কাজে ব্যয় করেছিলেন। তাছাড়া ঐতিহাসিক ইবনে ইসহাক, ইবনে সা’দ, আল-ওয়াকিদি, আল-মাসুদী ও ইবনে খালদুন হলেন বিশ্ববিখ্যাত ঐতিহাসিকদের অন্যতম। মুসলিম দর্শন হযরত আদম (আ.)-এর কাল থেকেই আরম্ভ হয়ে গিয়েছিল। জীবন ও জগতের পরিপূর্ণ মূল্যায়নের নাম যদি দর্শন হয়, তবে কি হযরত ইব্রাহিম (আ.) তথা অন্যান্য নবীর খোদা লাভের ধ্যান-ধারণা দর্শন নয়? কিন্তু বিশেষ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ইবনেসিনা, ইবনে রুশদ ও ইমাম গাজ্জালীর যুগে দর্শন শাস্ত্রের প্রকৃত চেহারা ফুটে উঠে। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলস্বরূপ বিশ্ববাসী বুঝতে সক্ষম হয়েছে, মুসলিম দর্শনই প্রকৃত দর্শন। ইসলামের সর্বশ্রেষ্ঠ দার্শনিক হলেন আল-ফারাবী ও ইমাম গাজ্জালী। পবিত্র কোরআনে রোগ যন্ত্রণার মুক্তির পথ বর্ণিত হয়েছে। অনুরূপভাবে সহীহ বোখারী শরীফে এ সম্পর্কে দুটি অধ্যায়ের অবতারণা করা হয়েছে। এ শাস্ত্র যাদের ছোঁয়ায় ভরপুর তারা হলেন- হুমায়ুন বিন ইসহাক, ইসা বিন ইয়াহিয়া, জাবির বিন হাইয়ান, মোহাম্মদ বিন জাকারিয়া, আলী, রাজীত, ইবনে সিনা, ইবনে মিনার। ‘কানুন’ নামক গ্রন্থ পাশ্চাত্যে ‘মেডিকেল বাইবেল’ নামে পরিচিত হয়েছিল। সুদীর্ঘ আটশ’ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যপুস্তক রূপে নির্ধারিত ছিল। বর্তমানে প্রচলিত অঙ্ক শাস্ত্রের জনক হলেন ‘আল খারিজমী’। তার রচিত গ্রন্থ দ্বাদশ শতাব্দী থেকে ষোড়শ শতাব্দী পর্যন্ত আধুনিক সভ্যতাভিমানী ইউরোপের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্যপুস্তক হিসেবে ল্যাটিন অনুবাদের মাধ্যমে ব্যবহৃত হয়েছিল। তাছাড়া নব্য রসায়ন শাস্ত্র যাকে আমরা কেমিস্ট্রি বলে থাকি এর আবিষ্কারক হলেন ‘জাবির বিন হাইয়ান’। ইউরোপের বীজগণিতে নব যুগের সূচনাকারী হলেন ‘ঈসা আল মুহানী’ প্রকৃত পক্ষে মুসলিম মানচিত্রকার ও ভূগোলবিদ হলেন- আল খারিজমী, আলী ইদ্রিস, আল মাকসুদী, আল বেরুনী প্রমুখ।
এরূপভাবে জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখা-প্রশাখায় মুসলিম মনীষীদের অবদান অন্ধকার আকাশে পূর্ণিমার চন্দ্রের মতো বিরাজমান। মানব সমাজের প্রধান প্রধান কাজ মুসলমানগণ সমাধান করেছেন। সর্বশ্রেষ্ঠ দার্শনিক আল ফারাবী ছিলেন মুসলমান। সর্বশ্রেষ্ঠ গণিতবেত্তা আবু কামিল ও ইব্রাহিম বিন সিনান ছিলেন মুসলমান। সর্বশ্রেষ্ঠ মানচিত্রকার ও ভূগোলবিদ আলী ইদ্রিস, আল মাকসুদী ছিলেন মুসলমান। বর্তমান বিজ্ঞান ও বৈজ্ঞানিক মুসলমানদের নিকট শতদিক দিয়ে ঋণী। কিন্তু হায়! যখন ইউরোপবাসীরা দস্তখত তো দূরের কথা দু’হাতের সাহায্যে টিপসইও দিতে জানতো না, তখন মুসলিম স্পেনে একজন নিরক্ষর লোক পাওয়া যেত না। আজ মুসলিম সমাজ তাদের মূল পুঁজি কোরআন-হাদীসকে অবহেলা করে বিশ্ববাসীর হাসির খোরাক ও হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছে। নানারূপ নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হচ্ছে মুসলিম সম্প্রদায়গুলো। আল্লাহ আমাদের সবাইকে ভালোভাবে কোরআন-হাদীস বুঝার ও নবীর আদর্শকে আঁকড়ে ধরে সুন্দর জীবন যাপন করার তৌফিক দান করেন। আমিন!